বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের উপকূলে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমী জলবায়ু মেলা, যেখানে স্থানীয় মানুষ নিজেরাই তুলে ধরেন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোজনের বিভিন্ন কৌশল। জলবায়ুর অভিঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের অন্যতম শ্যামনগরে এই মেলা যেন এক টুকরো আশার প্রদীপ।
ইয়ুথনেট গ্লোবাল, ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ (শ্যামনগর ফিল্ড অফিস) এবং স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন।
প্রধান অতিথি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব আমরা প্রতিনিয়ত অনুভব করি। তবে এই মেলার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে সমস্যা যত গভীরই হোক, মানুষের উদ্ভাবন ও সচেতনতা থাকলে আশার আলো সবসময় থাকে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কৃষক, যুব, এনজিও প্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তী কর্মচারীবৃন্দ। তাঁরা একসঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছেন, ভবিষ্যতের অভিযোজন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। উদ্যোক্তাদের আশা-এই উদ্যোগ নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এবং স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে উন্নয়নের পথ দেখাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকূলীয় অঞ্চল শ্যামনগর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, জলাবদ্ধতা ও নদীভাঙনের মতো সমস্যায় অতিষ্ঠ এখানকার মানুষ। কিন্তু সেই সঙ্গেই গড়ে উঠছে প্রতিবাদের ভাষা-প্রকৃতি ও পরিবেশকে সঙ্গে নিয়ে বেঁচে থাকার নতুন কৌশল।
মেলায় ভিড় করছেন শত শত মানুষ-কারও কৌতূহল, কারও আগ্রহ, কারও প্রশংসা। কিন্তু সবার মধ্যেই এক অভিন্ন উপলব্ধি: স্থানীয় সমস্যার সমাধানও সম্ভব স্থানীয় মানুষের হাত ধরেই। তাদের বক্তব্য, নিরাপদ ধরিত্রী সবুজ অরণ্য, নিশ্চিত করবে দুর্জয় তারুণ্য।
ব্যতিক্রমী এই মেলায় স্থান পেয়েছে লবণাক্ততা সহনশীল কৃষি, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, পুকুর ও খাল পুনর্খননের মাধ্যমে মিষ্টি পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণের কৌশন এবং স্থানীয় তরুণদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম।
খুলনা গেজেট/এএজে